জকিগঞ্জের গ্যাস কূপে প্রথম স্তরের ডিএসটি শেষ: ভালো ফলাফল পাওয়ার আশা

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ টুডে:: সিলেটের জকিগঞ্জের গ্যাস ক‚পে প্রথম স্তরের ফায়ারিং সম্পন্ন করেছে বাপেক্স। গত মঙ্গলবার সোয়া ১০ টায় জকিগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের আনন্দপুর গ্রামস্থ গ্যাস কূপে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি প্রাথমিকভাবে ডিএসটি (ড্রিল স্টিম টেস্ট) সৌভাগ্য শিখা জ্বালাতে সক্ষম হয়। প্রথম স্থরের পরীক্ষামূলক ফায়ারিং বৃহস্পতিবার শেষ করেছে বাপেক্স। তবে উচ্চ পর্যায়ের কড়াকড়ির কারণে প্রাথমিক স্তরের পরীক্ষামূলক ফায়ারিং নিয়ে কোন মন্তব্য করছেন না সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে বাপেক্সের একটি টিম ঢাকা থেকে জকিগঞ্জে এসে প্রাথমিকভাবে গ্যাসের অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে প্রথমে ঐ স্থানের গভীর থেকে মাটি সংগ্রহ করে ঢাকায় প্রেরণ করেন। এরপর পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে শতকোটি টাকা ব্যায়ে গ্যাসকূপের খনন কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৩ বছর খনন কাজ শেষে কূপটিতে মোট ৪টি স্তরে গ্যাস পাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হন বাপেক্সের প্রকৌশলীরা। এরপর গত মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রথম স্তরে ডিএসটি (ড্রিল স্টিম টেস্ট) শুরু করে। পরীক্ষামূলকভাবে পাইপের মুখে আগুন দিয়ে প্রথম স্তরে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করে বৃহস্পতিবার শেষ করেছে বাপেক্স। প্রথম স্তরের ডিএসটি পরীক্ষায় বেশ ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। দ্বিতীয় স্তরের টেস্ট চলতি সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে চারটি স্তরের ডিএসটি সম্পন্ন করা হবে।

নাম না প্রকাশের শর্তে বাপেক্সের একটি সূত্র জানায়, বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস উত্তোলন উপযোগী কি না তা যাচাই করতে ক্ষেত্রে গ্যাসের পরিমাণ, গ্যাসের সাথে পানির পরিমাণ এবং গ্যাসের চাপ পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলছে। ৪টি স্তরেই ডিএসটি পরীক্ষা শেষে গ্যাস মজুদের বিষয়ে ঘোষণা দেবে খনিজ মন্ত্রণালয়। এরআগে গ্যাস পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে কোন কথা বলতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা। নতুন এ কূপটির অভ্যন্তরে চাপ রয়েছে ৬ হাজার পিএসআই (প্রতি বর্গ ইঞ্চি) আর ফ্লোটিং চাপ রয়েছে ১৩ হাজারের অধিক। যা অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায় বেশি। গ্যাসের স্তর বাড়ার সাথে সাথে ফ্লোটিং চাপ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন তারা। কূপটির ৪টি স্তরে আশা অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া গেলে এটিই হবে দেশের ২৮তম গ্যাস ক্ষেত্র।

এদিকে, জকিগঞ্জ গ্যাস কূপে পরীক্ষামূলক ফায়ারিং শুরুর খবরে গত দুইদিন আশপাশ উপজেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের হাজারো নারী পুরুষ গ্যাস কূপের ফায়ারিং দেখতে ভীড় করেন। পরীক্ষামূলক ফায়ারিং দেখে ও জকিগঞ্জের মাটির নীচে খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়ার সংবাদে বেশ আনন্দিত লোকজন। তবে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনের দাবী জকিগঞ্জে যেন গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে বাপেক্সের জকিগঞ্জ রূপকল্পের পরিচালক মোজাহিদ কবিরের সাথে বার বার যোগাযোগ করে প্রাথমিক ফায়ারিং প্রসঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও উচ্চ পর্যায়ের কড়াকড়ির কারণে তিনি কথা বলতে রাজী হননি। তবে জানিয়েছেন, ভালো ফলাফল পাওয়া গেলে খনিজ মন্ত্রণালয় থেকে বিস্তারিত জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর